আলোর মনি রিপোর্ট: শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ্য নির্যাতনের শিকার সেই শিশুটি লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল ছেড়ে বাড়িতে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে পরিবারের সঙ্গে শিশুটি তার নানির বাড়িতে গেছে। ঘটনার ৪দিন পার হলেও মামলা করতে পারেনি ভুক্তভোগী পরিবারটি। ৭বছরের শিশু হাসিনার সারা শরীর ও মাথায় অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন নিয়ে রোববার (২৯ আগস্ট) রাতে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।
অভিযোগ উঠেছে, ১বছর হাসিনার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে পুলিশ কর্মকর্তা আজহার আলী সুমন ও তার স্ত্রী ডেইজি বেগম।
শিশুটির মা আমেনা বেগম জানান, ছাওয়া (মেয়ে) মোর লোক দেখলে ভয় পায়। দিনরাত ছটফট করে। তাই হাসপাতাল থাকি বাড়িত আসছং। তার মেয়ে এখন কিছুটা সুস্থ্য বলে জানান।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা থেকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে আসেন দিনমজুর বাবা হাসান আলী।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, মেয়ের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে তার বুক ফেটে গেছে। মানুষ হয়ে একটি শিশুর ওপর এমন বর্বর কাজ করতে পারে, তা তার কল্পনার বাইরে।
মামলা দায়ের প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হামরা ঢাকায় রিকশা চালায়। কেমন করি, কোথায় মামলা করা নাগবে কিছুই জানি না। টাকা-পয়সাও নাই। ওমরা ক্ষমতাশীল মানুষ। বিচার পাওয়া নিয়ে তিনি শঙ্কিত।
নির্যাতিত শিশুটিকে নিয়ে অনলাইন, পত্রিকা ও টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ কর্মকর্তা আজহার আলী সুমন দাবি করেন, হাসিনাকে অসুস্থ্য ও শরীরে ঘা-পাঁচড়া অবস্থায় তার কাছে আনা হয়েছিল। তিনি আদর-যত্ন করে তাকে সুস্থ্য করে তোলেন। তাকে বিপদে ফেলতে এসব করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। নরসিংদী জেলায় পুলিশ ইন্সপেক্টর পদে তিনি কর্মরত রয়েছেন।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মন্জুর মোর্শেদ দোলন সাংবাদিকদের জানান, শিশুটি ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে গেছে। তবে তার মানসিক ধকল কাটতে বেশ সময় লাগবে।
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতলী গ্রামের দিনমজুর পরিবারের সন্তান হাসিনা বেগম। বছর খানেক আগে একই গ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা আজহার আলী সুমন বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে হাসিনাকে ঢাকায় তার বাড়িতে নিয়ে যান। দীর্ঘ ১বছর পর রোববার (২৯ আগস্ট) সকালে গাড়িতে করে অসুস্থ হাসিনাকে মহিষতলী এলাকায় রেখে যায় পুলিশ কর্মকর্তার লোকজন।